খুলনা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’ র ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) গত দেড় দশক ধরে সময়োপযোগী ও কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জ্ঞানকে সম্প্রসারণে নিরলসভাবে কাজ করছে। বর্তমানে এ ইনস্টিটিউট থেকে সব বয়সী এমনকি সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে এখান থেকে যেকোনো বয়সী সাধারণ মানুষ ৬ মাস, ৩ মাস এবং যে কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের দুই সপ্তাহ মেয়াদী প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি সূত্রে জানা যায়, অত্র ইনস্টিটিউটে সময়োপযোগী ২৬ টি প্রোগ্রামের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬ মাস মেয়াদী প্রফেশনাল ডিপ্লোমা কোর্সে ৮ টি এবং ট্রেনিং প্রোগ্রামে ১৮ টি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। ভর্তির যোগ্যতা এইচএসসি/সমমান, ৬ মাস মেয়াদী ট্রেনিং প্রোগ্রামে ভর্তি ফি ৩ হাজার টাকা, ভর্তির যোগ্যতা এইচএসসি/সমমান। ভর্তির শেষ তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৫। প্রশিক্ষণে মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পাঠদান, ইন্টারেক্টিভ পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে ক্লাস, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরীতে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাস রুমে রয়েছে ইন্টারনেট ও ওয়াইফাইয়ের সুবিধা। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ প্রত্যেক শিক্ষার্থী আইআইসিটি, কুয়েট থেকে সনদপত্র প্রাপ্তির সুবিধা।
আইআইসিটি’র পরিচালক প্রফেসর ড. আশরাফুল গনি ভূঁইয়া খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘আমাদের আইআইসিটি’র মূল লক্ষ্য হচ্ছে সময়োপযোগী ও কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জ্ঞানকে সম্প্রসারণ করা। তথ্য প্রযুক্তির সকল সুবিধাসমূহ প্রান্তিক পর্যায়ে বিশেষ করে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে আইআইসিটি, কুয়েট অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, ‘সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আইআইসিটি, কুয়েট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং সময়োপযোগী ও নতুন নতুন ট্রেনিং প্রোগ্রাম সংযোজন, নতুন ল্যাব তৈরি করা এবং আগামীতে আরো নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। সাধারণ জনগোষ্ঠীকে ভর্তির ক্ষেত্রে অধিক সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে কোর্স ফি কমানোসহ ভর্তি প্রক্রিয়া অধিকতর সহজ করা হয়েছে। জানুয়ারি ২০২৫ সেশনে আইআইসিটিতে ৮ টি প্রফেশনাল ডিপ্লোমা ও ১৮ টি ট্রেনিং প্রোগ্রামে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আমাদের লক্ষ্য আগামীতে আরো সময়োপযোগী কোর্স সংযোজন করা এবং আইসিটি সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা’।
ড. আশরাফুল গনি ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে যে সকল প্রোগ্রামের ট্রেনিং প্রদান করা হয় তা অন্যান্য যে কোন প্রতিষ্ঠান হতে ব্যতিক্রম। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মজীবনে অনেক বেশি সহায়ক। আমাদের রয়েছে দক্ষ শিক্ষকমন্ডলী, উন্নত ও আধুনিক ল্যাব এবং মনোরম পরিবেশে ক্লাস ও ল্যাবে পাঠদান। শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে ক্লাসের বাইরে অতিরিক্ত সময় ল্যাব ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এখানকার শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই শিক্ষার্থীদের যে কোন প্রয়োজনে সাহায্য করে থাকে। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা এখানকার উন্নত সুযোগ-সুবিধাসমূহ কাজে লাগিয়ে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট করতে পারবেন’।
তিনি বলেন, ‘এখানে ভর্তি হওয়া মানে এই না যে, আপনি সার্টিফিকেট পেয়ে গেলেন! সার্টিফিকেটের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে ক্লাসে সর্বনিম্ন ৬০ শতাংশ উপস্থিতি এবং পারফরম্যান্স সন্তোষজনক হতে হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি সরকারের আইসিটি বিভাগের অধীনে EDGE প্রকল্পের আওতায় আমাদের এ ইনস্টিটিউট থেকে খুলনা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহের ১১৫ জনের অধিক সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন’।
তিনি বলেন, ‘সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কুয়েটে যে ইনকিউবেশন সেন্টারটি রয়েছে সেটি আইআইসিটি, কুয়েট পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। অতিদ্রুত সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয় এটি কুয়েটের কাছে হস্তান্তর করবে। হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আইআইসিটি, কুয়েটের পরিসর এবং গতিশীলতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং এর মাধ্যমে খুলনাঞ্চলের মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে’।
খুলনা গেজেট/লিপু